বড়পুকুরিয়া কয়লা কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি পেতেই হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম। শনিবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি। তৌফিক-ই-ইলাহী বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্তে যাদের দোষ প্রমাণিত হবে, তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এ সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বিদ্যুৎ সচিব জানান, জমে থাকা ৩৭০ টন কয়লা দিয়ে ঈদের ছুটিতে সীমিত পরিসরে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো হবে। ঈদের সময় রংপুর বিভাগের বাসিন্দাদের আরও একটি স্বাচ্ছন্দ্য দিতে কেন্দ্রটি চালানো হবে বলে জানান সচিব।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর রংপুরে প্রতিদিন ১৫০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হচ্ছে। পিডিবি বলছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পূর্ণ মাত্রায় চালাতে প্রতিদিন ৫ হাজার টন কয়লার দরকার হয়। কিন্তু এখন একটি ইউনিট সংস্কারের জন্য বন্ধ থাকায় দৈনিক চার হাজার টন কয়লা প্রয়োজন হচ্ছে। এর বিপরীতে ৩৭০ টন কয়লা দিয়ে কতটা সময় কেন্দ্রটি চালানো সম্ভব হবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এদিকে কেন্দ্রটির জন্য কয়লা আমদানির দিকে ঝুঁকছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এরই মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ বিষয়ে সচিব বলেন, আমাদের অন্য কেন্দ্রের জন্যও কয়লা প্রয়োজন হবে। একই সঙ্গে এ কেন্দ্রটির জন্যও সংকট দূর করার চিন্তা করা হচ্ছে।
সচিব সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভারত থেকে এর আগে একবার কয়লা আমদানি করা হয়েছিল। কিন্তু ওই কয়লা দিয়ে কেন্দ্রটি চালানো যায়নি। সঙ্গত কারণে এমন খনি থেকে কয়লা আমদানি করা হবে, যার সঙ্গে বড়পুকুরিয়া খনির কয়লার সাদৃশ্য রয়েছে। তিনি বলেন, সরকার গঠিত কমিটি অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা আমদানি করা যায় কি-না তা খতিয়ে দেখবে। কয়লার পরিবহন এবং জোগানের বিষয়েও তারা সরকারের কাছে সুপারিশ করবে। চীনা ঠিকাদার কোম্পানির সঙ্গেও বিদ্যুৎ বিভাগের আলোচনা হয়েছে জানিয়ে বিদ্যুৎ সচিব বলেন, আমরা আশা করছি, আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে বড়পুকুরিয়া থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হবে।
কয়লা চুরির তদন্ত করবে ক্যাব: বড়পুকুরিয়ার কয়লা উধাওয়ের ঘটনায় নিজেরা তদন্ত করবে বলে জানিয়েছে কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম জানিয়েছেন, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বড়পুকুরিয়ার বিষয়ে সবার কাছে তথ্য চাওয়া হবে। এসব তথ্যের ভিত্তিতেই তদন্ত করবে কমিশন।
বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখতে আগে থেকেই ক্যাবের এ তদন্ত কমিশন কাজ করছে। ছয় সদস্যের এ কমিশনে রয়েছেন কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, অধ্যাপক বদরুল ইমাম, অধ্যাপক এমএম আকাশ, অধ্যাপক শামসুল আলম ও অধ্যাপক সুশান্ত কুমার দাস।
সূত্র: সমকাল অনলাইন