কোটি কোটি বছর আগে মঙ্গলগ্রহে যে হ্রদ ও সমুদ্র ছিল, সেই পানি এখন আর নেই। বরং মঙ্গলগ্রহ এখন শুষ্ক আর পাথুরে বলে জানা গেছে। তবে পানির বিষয়টি এখনও রহস্যই থেকে গেছে।
অনেকেই মনে করেন, মঙ্গলগ্রহের পানি মহাশূন্যে হারিয়ে গেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার অর্থায়নে করা এক গবেষণা অনুযায়ী, মঙ্গলগ্রহের পানি কোথাও হারিয়ে যায়নি; বরং তা এর ভূপৃষ্ঠের গভীরে খনিজের মধ্যে আটকে রয়েছে। সায়েন্স সাময়িকীতে এ গবেষণাসংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণা প্রবন্ধের প্রধান লেখক ইভা স্কেলার বলেছেন, ‘আমরা বলছি যে, মঙ্গলগ্রহের ভূপৃষ্ঠ পানিযুক্ত খনিজ দিয়ে গঠিত। যেসব খনিজ সেখানে আছে, তার ক্রিস্টাল গঠনে পানি রয়েছে।’
স্কেলারের মডেল অনুযায়ী, মঙ্গলগ্রহে ৩০ থেকে ৯৯ শতাংশ পানি এসব খনিজের মধ্যে আটকে রয়েছে।
আদিম মঙ্গলগ্রহের পুরোটাই পানিতে ডুবে ছিল বলে ধারণা করা হয়। সেখানে ১০০ থেকে ১৫০০ মিটার গভীরতার সমুদ্র ছিল। গ্রহটি তার বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র হারিয়ে ফেলে। ফলে এর পরিবেশ ক্রমেই দূরে সরে যায় এবং ক্রমে মঙ্গলগ্রহ থেকে পানি হারিয়ে যায়।
তবে নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, চৌম্বকক্ষেত্র হারালেও তাতে পানি হারিয়েছে কম। অধিকাংশ পানি ভূত্বকেই রয়ে গেছে।
মঙ্গলগ্রহে পাঠানো নাসার রোভার ও গ্রহটিতে পড়া নানা উল্কা পর্যবেক্ষণ করে গবেষকরা পানির উপাদান হাইড্রোজেনের খোঁজ করেন।
গবেষকদের তথ্যানুযায়ী, মঙ্গলগ্রহ ৩৭০ কোটি থেকে ৪০০ কোটি বছর আগে পানিশূন্য হয়েছিল। অর্থাৎ স্কেলারের মতে, ৩০০ কোটি বছর ধরে মঙ্গলগ্রহে এ রকম অবস্থায় রয়েছে।
স্কেলার আশা করছেন, সম্প্রতি মঙ্গলগ্রহ অভিযানে থাকা পারসেভারেন্স রোভারটি এ গবেষণার ক্ষেত্রে আরও অবদান রাখতে পারবে। রোবটটি মূলত এ ধরনের প্রক্রিয়া, সেখানে ঘটেছে কিনা তা তদন্ত করতেই গেছে।