রফিকুল আলম মামুন, বান্দরবান – করোনা পরিস্থিতিতে চরম আর্থিক দুর্দশায় পড়েছেন বান্দরবান শহরের রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা। প্রায় দুই মাস ধরে হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এই খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। মালিকদের পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন অন্ততঃ এক হাজার কর্মচারি। ব্যবসা বন্ধ থাকায় তারাও এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বিগত দুই বছর ধরে পর্যটক কম আসায় তাদের কাঙ্ক্ষিত ব্যবসা হয়নি, তার ওপর করোনার প্রার্দুভাবে দীর্ঘদিন ধরে শহরের সব খাবার হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় বেশ ক্ষতির মুখোমুখি তাঁরা। দীর্ঘমেয়াদী এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা তাদের পক্ষে সহজ নাও হতে পারে।
জেলা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি গিয়াস উদ্দীন জানান, বান্দরবান শহরে অর্ধশতাধিক খাবার হোটেল ও রেস্তোরাঁ রয়েছে। এর সবগুলোই করোনার কারণে বন্ধ রয়েছে। বন্ধ থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানগুলো এখন হুমকির মুখে। অনেক ব্যবসায়ী ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। আরো কিছুদিন এ অবস্থা চলতে থাকলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।
তিনি বলেন, খাবার হোটেলগুলো চালু না থাকলেও এগুলোর বিদ্যুৎ বিল, ভাড়া থেমে নেই। এই খরচ মেটাতে প্রতিটি মালিককেই হিমশিম খেতে হবে।
জেলা সদরের ফিস্ট রেষ্টুরেন্টের মালিক শাহাদাত উর রহমান বলেন, ব্যবসা বন্ধ থাকায় দায় দেনা বেড়েছে। র্কমচারিরাও বেকার। শীঘ্রই পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এই ক্ষতি পোষানো বেশ কঠিন হয়ে পড়বে।
শহরের নীলাচল রেষ্টুরেন্টের মালিক ফয়সাল জানান, দুই মাস ধরে দোকান বন্ধ থাকায় মজুদ করা অনেক খাবার নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া দোকান ভাড়া বিদ্যুৎ বিলও রয়ে গেছে অপরিশোধিত। কর্মচারিরাও সবাই বেকার। অনেকের বেতন বাকি রয়েছে।
এছাড়াও শহরের অধিকাংশ রেস্তোরাঁ ও খাবার হোটেলের মালিকরা তাদের দুরাবস্থার কথা জানিয়েছেন।
এদিকে বান্দরবান শহরের হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় সম্পূর্ন বেকার জীবন যাপন করছেন অন্তত এক হাজার কর্মচারি। তাদের অনেকেই জানিয়েছেন সরকারি ত্রাণ ছাড়া তাদের আর কোন অবলম্বন নেই। কারো কাছে ধার-দেনা চেয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। তারা নিয়মকানুনের ভেতরে রেখে হলেও শীঘ্রই সব খাবার হোটেল রেস্তোরাঁ খুলে দেয়ারও দাবি জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব রেজাউল করিম সরকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি হোটেল রেস্তোরাঁ মালিক শ্রমিকদের সহায়তার ঘোষনা দিয়েছেন। সে অনুযায়ী সারা দেশ থেকে মালিক শ্রমিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তবে, কিভাবে এ সহায়তা মালিক র্কমচারিরা পাবেন সেটি সরকার পরিষ্কার করেনি। তাই বিষয়টি নিয়ে সরকারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি সরকার কথা রাখবে।
তিনি সারা দেশের খাবার হোটেল রেস্তোরাঁর ভ্যাট, ট্যাক্স, ভাড়া মওকুফ করাসহ বিদ্যুৎ গ্যাস পানির বিলে কোন প্রকার সূদ আরোপ না করার জন্য সরকারের কাছে দাবি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন।