নতুন করোনাভাইরাস ক্রমেই ‘শক্তি হারাচ্ছে’ বলে ইতালির এক শীর্ষ চিকিৎসকের দাবি নাকচ করে দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বিশেষজ্ঞ এবং একাধিক বিজ্ঞানী। সোমবার তারা বলেছেন, এই দাবির পেছনে যুক্তিসংগত কোনো প্রমাণ নেই। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইতালির লম্বার্ডির সান রাফায়েল হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক অধ্যাপক আলবার্তো জাংরিলো রোববার এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছিলেন, দেশটিতে ক্লিনিক্যালি ভাইরাসটির এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এপিডেমিওলজিস্ট মারিয়া ভন কেরখোভ এবং কয়েকজন শীর্ষ ভাইরাস ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, অধ্যাপক আলবার্তোর মন্তব্যের বৈজ্ঞানিক কোনো প্রমাণ নেই।
ডা. কেরখোভ সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সংক্রমণের সক্ষমতার দিক থেকে ভাইরাসের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এমনকি তীব্রতার দিক থেকেও এটি বদলায়নি।’’
ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর এর পরিবর্তন এবং নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা নতুন কিছু নয়। তবে নতুন করোনাভাইরাসের শক্তি হারানোর কোনো প্রমাণ এখনও দেখতে পাচ্ছেন না বিশেজ্ঞরা। ভাইরাসটিতে ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী ৬০ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে তিন লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষের।
লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের সংক্রামক রোগের অধ্যাপক মার্টিন হিবার্ড বলেন, ‘‘নতুন করোনাভাইরাসের জিনগত পরিবর্তনগুলো বুঝতে এখন পর্যন্ত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাগুলো দেখে বলার উপায় নেই যে, ভাইরাসটি দুর্বল হয়েছে বা এখন তা কম মারাত্মক। ৩৫ হাজারের বেশি ভাইরাসের জিনোমের উপাত্ত ঘেঁটে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটির তীব্রতার পার্থক্যের উল্লেখযোগ্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’’
তবে অধ্যাপক আলবার্তো জানিয়েছেন, তার সহকর্মী মাসিমো ক্লেমেন্তি পরিচালিত একটি গবেষণা তার দাবিকে সমর্থন করে। ওই গবেষণায় দেখা গেছে, মার্চ মাসে ভর্তি হওয়া রোগীদের তুলনায় মে মাসে ভর্তি হওয়া রোগীদের ভাইরাল লোডের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য লক্ষ্য করা গেছে। সান রাফায়েল হাসপাতালের রোগীদের ওপর পরিচালিত গবেষণা প্রতিবেদনটি আগামী সপ্তাহে প্রকাশ করা হবে।