করোনায় মৃত্যুর হার বিবেচনায় বিশ্বে ৭০ তম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ এবং এদেশে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যাও অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। তারপরও তুলনামূলকভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত অনেক দেশের চাইতে বাংলাদেশে মৃত্যুর হার বেশি।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশে মৃত্যুর হার ১০.৪০ শতাংশ এবং এখন পর্যন্ত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু বিশ্বের মৃত্যুহার ৫.৮%। সেই ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশের এই মৃত্যুহার বিশ্বের মৃত্যুহারের দ্বিগুণ।
গত বুধবার বাংলাদেশে ৫৪ জনের শরীরে সংক্রমণ মিলেছে যা এখন পর্যন্ত একদিনে পাওয়া সর্বোচ্চ সংখ্যা। এ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সর্বমোট ২১৮ জনে পৌঁছেছে।
একই দিনে বিশ্বে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩,৭২৬ জনে, ২১২ টি দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১,৪৫৯,৩৪৩ এবং তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন কমপক্ষে ৩,৮,৬১৭ জন।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে আরও জানা যায়, ভারতে মৃত্যুর হার ২.৮ শতাংশ; পাকিস্তানে মৃত্যুর হার ১.৪ শতাংশ; আফগানিস্তানে মৃত্যুর হার ৩.৩ শতাংশ এবং শ্রীলংকায় মৃত্যুর হার ৩.২ শতাংশ যেখানে নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপে এখন পর্যন্ত করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি।
উপরের সব কয়টি দক্ষিণ এশিয়ার দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বাংলাদেশের চাইতে বেশি শুধুমাত্র শ্রীলংকা ছাড়া। ইন্ডিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫২৭৪ জন এবং মারা গিয়েছেন ১৪৯ জন, পাকিস্তানে আক্রান্তের সংখ্যা ৪০৩৫ যার মধ্যে মারা গিয়েছেন ৫৭ জন; আফগানিস্তানে আক্রান্তের সংখ্যা ৪২৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। কিন্তু শ্রীলংকায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৮৫ জন যার মধ্যে মারা গিয়েছেন ৬ জন।
সবচেয়ে বেশি মৃত্যুহার পশ্চিম আফ্রিকার দেশ লাইবেরিয়ায়। যা প্রায় ২১.৪%। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ জন এবং মৃত্যুর সংখ্যা ৩ জন।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যুর হার বেশি তার কারণ বেশিরভাগেরই পরীক্ষা করা হয়নি। সরকার করোনা পরীক্ষা পর্যাপ্ত পরিমাণে করছেনা বলে দাবি তাদের। বিডিনিউজ ২৪ এর সূত্রে জানা গেছে, আইইডিসিআর গত সপ্তাহ পর্যন্ত মাত্র ১৯০০ জনের পরীক্ষা করেছে। যার মানে দাঁড়ায় প্রতি ১০ লক্ষ মানুষের মধ্যে শুধুমাত্র ১১ জনের টেস্ট করা হয়েছে।
আইইডিসিআরের একজন সাবেক কর্মকর্তা বলেন, ‘‘আমরা কেবলমাত্র যারা রোগে আক্রান্ত এবং যাদের অবস্থা গুরুতর তাদেরকে পরীক্ষা করছি। যার কারণে মৃত্যুহার বেশি। যদি আমরা যাদের মধ্যে হালকা বা মাঝারি ধরনের লক্ষণ আছে তাদেরও পরীক্ষা করি তাহলে রোগীর সংখ্যা আরও বেশি হত’’।
যদিও আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা পুরো ব্যাপারটাকেই অস্বীকার করছেন।