দৈনন্দিন জীবনে পর্যাপ্ত ঘুম অতি প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। সারাদিনের পরিশ্রমের পর ঘুম শরীরকে বিশ্রাম দেয়। সেই সঙ্গে দেহের অভ্যন্তরীন সব বৃদ্ধি ঘটায় এবং সেল পুনঃর্নিমান করে।ঘুম ভাল হলে কাজে শক্তি পাওয়া যায়। ঘুম শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখার সঙ্গে সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।কিন্তু ঘুম কম হলে বা অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে শরীরে নানাবিধ সমস্যা তৈরি হয়। যেমন-
আলঝাইমার : ঘুম ক্লান্ত মস্তিষ্ককে সক্রিয় করে।সেই সঙ্গে মস্তিষ্কর সেলগুলোর ক্ষয় রোধ করে।কম ঘুমের কারণে ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে শুরু করে। তখন ডিমেনশিয়া, আলঝাইমার-এসব রোগের সম্ভাবনা দেখা দেয়।গবেষণায় দেখা গেছে, আলঝাইমার রোগের অন্যতম কারণ ঘুম কম হওয়া।
স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি : যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় কম ঘুমের সঙ্গে স্থূলতা এবং ডায়াবেটিসের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুম কম হলে শরীরে ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ বেড়ে যায় যা শরীরে শর্করার মাত্রা বাড়ায়।
হৃদরোগের ঝুঁকি : সাধারণত জীবনযাপন পদ্ধতি ও খাদ্যাভাসের কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের ঘুম অনেক কম হয় তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।এছাড়া কম ঘুমের কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকিও অন্যদের তুলনায় বেশি থাকে।
আত্মহত্যা প্রবণতা : কম ঘুমের কারণে মানসিক সমস্যা বাড়ে। ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্ট্যানফোর্ড ইউভিার্সিটি অব মেডিসিনে’র এক গবেষণায় দেখা গেছে, অল্পবয়সী এবং মধ্য বয়সীদের মধ্যে যাদের ঘুম কম হয় তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি থাকে।
হজমে সমস্যা : গবেষণা বলছে, যারা ৬ ঘণ্টারও কম ঘুমান তাদের হজমশক্তিতে সমস্যা দেখা দেয়।
মূত্রথলির ক্যান্সার : ‘দ্য জার্নাল ক্যান্সার এপিডিমেলজি’তে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে জানা যায়, যাদের ঘুম কম হয় অন্যান্যদের চেয়ে তাদের ‘মূত্রথলির ক্যানসার’ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
এসব কারণে নিয়মিত ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।