জাতীয় নির্বাচনের এই ব্যস্ত সময়ে হঠাৎ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের সাক্ষাৎ পাচ্ছেন না জাতীয় পার্টির নেতারা। গত কয়েক দিন ধরেই দলের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই তার যোগাযোগ করতে পারছেন না। এরশাদের বাসভবন বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কে না থেকে তিনি এখন গুলশানে একটি বাড়িতে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
‘ডাক্তারি পরীক্ষা’র জন্য এরশাদ গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট পার্ক থেকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে যান। দলটির একাধিক নেতা জানান, রোববার তিনি হাসপাতাল ছাড়লেও তার নিজের বাসভবনে ফিরে আসেননি। দলের মাত্র কয়েকজনই এখন তার ইচ্ছা অনুযায়ী ফোনে বা সরাসরি যোগাযোগ রাখছেন। শুধুমাত্র তারাই জানেন এরশাদ বর্তমানে ঠিক কোথায় রয়েছেন। আর এতেই দলটির মধ্যে নানা জল্পনা কল্পনা শুরু হয়ে গেছে। কারণ এর আগেও বিভিন্ন সময় তিনি এরকম রহস্যজনক আচরণ করেছিলেন।
তবে এবার তিনি এমন সময়ে অজ্ঞাতবাসে গেলেন যখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির আসন ভাগাভাগির নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে দলের নেতাকর্মীরা।
জাতীয় পার্টির একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, শুক্রবার সিএমইচে যাওয়ার পর রোববার তিনি সেখান থেকে বের হন। প্রেসিডেন্ট পার্কে না ফিরে গুলশানে একটি বাড়িতে গিয়েছেন তিনি।
জাতীয় পার্টি থেকে বর্তমান সরকারের মন্ত্রী হয়েছেন এমন একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন যে তার ধারণা দলের প্রার্থী চূড়ান্ত করা নিয়ে ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির ব্যাপারে এরশাদ চাপে রয়েছেন।
বর্তমান জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় রয়েছেন এরশাদের জাতীয় পার্টি। গত কয়েক দিনে দুই দফায় চিঠি দিয়ে আওয়ামী লীগকে আসন ভাগাভাগির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে বলেছে দলটি। তবে এখন পর্যন্ত বিষয়টির সুরহা হয়নি। এরশাদ চাইছেন আওয়ামী লীগ ১০০ আসন তার দলের প্রার্থীদের জন্য ছেড়ে দিক। এ ব্যাপারে গতকাল সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের। রুহুল আমিন হাওলাদার পূর্বনির্ধারিত এই বৈঠকের কথা দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছিলেন। তবে সন্ধ্যায় তিনি জানান, বৈঠকটি স্থগিত করা হয়েছে।
তিনি জানান, জাপার প্রার্থীরা কোন আসন থেকে নির্বাচন করবেন সেটি এখনও নিশ্চিত না হওয়ায় দলের নেতাকর্মীদের দিক থেকে তাদের ওপর চাপ রয়েছে।
এই অবস্থায় বিএনপি বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির ব্যাপারে কোনো আলোচনা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সাল চিশতি ‘না’ জবাব দেন।