বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড উপপরিষদের প্রকাশিত প্রতিবেদন মতে, গত জুন মাসে দেশে ৬২ জন নারী ও কন্যা শিশু হত্যার শিকার হয়েছে। এ সময় ১০১ জন নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণের ঘটনাসহ মোট ৩০৮ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
উপপরিষদে সংরক্ষিত ১৪টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে লিখিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
বুধবার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মালেকা বানু স্বাক্ষরিত উক্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ধর্ষণের শিকার ১০১ জনের মধ্যে ৬৯ জন ধর্ষণ ও ২৫ জন গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ সময় ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে সাতজনকে। এ ছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ১৫ জনকে।
উক্ত এক মাসে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছে তিনজন। যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ছয়জন। এ সময় অ্যাসিড আক্রান্তের শিকার হয়েছে একজন। অগ্নিদগ্ধের শিকার হয়েছে চারজন। অপহরণের শিকার হয়েছে ১৪ জন।
এ সময় পতিতালয়ে বিক্রি করা হয় একজনকে। একই সময় বিভিন্ন কারণে ৬২ জন নারী ও কন্যাশিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এদের মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয়েছে পাঁচজনকে।
প্রতিবেদন মতে, এ সময় গৃহপরিচারিকা হত্যা করা হয়েছে দুইজন। একজন গৃহপরিচারিকা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়।
গত মাসে যৌতুকের কারণে নির্যাতন করা হয়েছে সাত নারীকে। এ সময় শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১৯ জন নারী ও কন্যাশিশু। উত্ত্যক্ত করা হয় পাঁচজনকে।
এক মাসে বিভিন্ন নির্যাতনের কারণে ১৭ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। ৩৪ জন নারী ও কন্যাশিশুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ফতোয়ার শিকার হয়েছে একজন। বাল্যবিবাহ হয়েছে এক কন্যাশিশুর। এছাড়া নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দুই জন নারী ও শিশু।
মহিলা পরিষদ মনে করে, করোনাকালে নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। কিন্তু সব তথ্য গণমাধ্যম পর্যন্ত পৌঁছায় না। নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণসহ দ্রুত গ্রেফতার এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানায়।
এ ধরনের নির্যাতন প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার, প্রশাসনের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে মহিলা পরিষদ।