প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলাকারী নিয়াজুল ইসলাম খানকে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ।
তবে গতকাল বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে শামীম ওসমান দাবি করেছেন, ‘নিয়াজুলের অস্ত্রটি খোয়া গেছে। সেটি ফেরত পাওয়া যায়নি। নিয়াজুল মামলা করতে চাইলেও পুলিশ মামলা নেয়নি।’
শামীম ওসমানের চার ক্যাডারের একজন হিসেবে নারায়ণগঞ্জবাসী তাঁকে আগে থেকেই চিনতেন। প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলার পর এখন সারা দেশে আলোচিত নিয়াজুল।
গণমাধ্যমে অস্ত্র হাতে ছবি প্রকাশ হওয়ার পর গতকাল নারায়ণগঞ্জে আর তাঁকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। বিভিন্ন সূত্র জানায়, উত্তর চাষাঢ়ার বাড়িতে বা শিবু মার্কেটে নিজের রেস্তোরাঁয় গতকাল ছিলেন না নিয়াজুল।
এদিকে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণে ওই দিন সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক নেতারা। তাঁরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিয়াজুলসহ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গতকাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। ওই হামলায় ১২ জন সাংবাদিক আহত হন।
নিয়াজুলের বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল বলেন, নিয়াজুলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গণমাধ্যমের ছবি ও ভিডিও ফুটেজে তাঁর যে অস্ত্রটি দেখা গেছে, তা বৈধ নাকি অবৈধ, সেই বিষয়েও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এই অস্ত্রের উৎস কী, ওই ব্যক্তি কেন সেখানে অস্ত্র নিয়ে গেলেন, সে বিষয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। তাঁকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, নিয়াজুল একসময় জেলার শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসী ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে জোড়া খুনসহ কী কী মামলা রয়েছে, সেগুলোর খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। যদিও তাঁর নামে একটি লাইসেন্স করা অস্ত্র রয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু সেই অস্ত্রটিই তিনি প্রদর্শন করেছেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আর লাইসেন্স করা অস্ত্র থাকলেও এটা জনসমক্ষে প্রকাশ্যে দেখানো এবং কাউকে কোনো কারণ ছাড়াই গুলি করার হুমকি দিতে পারেন না।
সাংবাদিকদের প্রতিবাদ: গতকাল দুপুরে চাষাঢ়ায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ও নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের কেন্দ্রীয় নেতারাও অংশ নেন। নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে নাফিজ আশরাফের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের মহাসচিব ওমর ফারুক, সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভূঁইয়া প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মাহবুবুর রহমান বলেন, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণে সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে হামলা করে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সন্ত্রাসী নিয়াজুলসহ অন্যদের গ্রেপ্তারে আলটিমেটাম দিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।