ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় দাতব্য সংস্থাগুলোর অন্যতম অক্সফামের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে ভূমিকম্পবিধ্বস্ত হাইতিতে দায়িত্ব পালনকালে যৌনকর্মী ভাড়া করে চাকরি হারানো একজন পরে বাংলাদেশে চাকরি করে গেছেন অন্য একটি দাতব্য সংস্থার শীর্ষ কর্তা হিসেবে।
ফরাসি দাতব্য সংস্থাটি বলছে, ভন হওয়ারমেরিনকে নিয়োগ দেওয়ার আগে তারা তার সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়েছিলেন।
“কিন্তু অক্সফাম তার অনৈতিক কর্মকাণ্ড, অভ্যন্তরীণ তদন্তের ফলশ্রুতিতে তার পদত্যাগের কারণ সম্পর্কে আমাদের সতর্ক করেনি।”
“উপরন্তু তার সঙ্গে কাজ করা অক্সফাম কর্মীদের, যাদের মধ্যে মানবসম্পদ বিভাগের একজন ছিলেন, কাছ থেকে তার সম্পর্কে আমরা ইতিবাচক বার্তা পেয়েছিলাম,” বলেছেন সংস্থার একজন মুখপাত্র।
অক্সফাম হাইতিতে তাদের কর্মীদের ওই কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে বলে টাইমসের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
কর্মীদের বিরুদ্ধে যৌনকর্মী ভাড়া করা , পর্নোগ্রাফি ডাউনলোড, নিপীড়ন ও ভয় দেখিয়ে ইচ্ছেমতো কাজ করতে বাধ্য করার অভিযোগের অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে অক্সফাম। এরপর ভন হওয়ারমেরিনসহ সাতজন সংস্থাটির চাকরি হারান।২০১০ সালে হাইতিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় গিয়ে ত্রাণকর্মীরা যৌনতার জন্য পতিতা ভাড়া করেছিলেন বলে খবর প্রকাশ হওয়ার পর শুক্রবার অক্সফাম দেশটিতে তাদের সাবেক কয়েকজন কর্মীর আচরণের নিন্দা জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, “২০১১ সালে হাইতিতে অক্সফাম কর্মীদের কয়েকজনের যে আচরণ প্রকাশ পেয়েছিল তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য, আমাদের মূল্যবোধ ও কর্মীদের থেকে আমরা যে মান প্রত্যাশা করি তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।”
ত্রাণকর্মীদের পতিতা ভাড়া করার বিষয়ে জানতে চাইলে টাইমসকে অক্সফাম বলেছে, “ওই অভিযোগ জানার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছিলাম।”
তদন্তের পর চারজন কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছিল এবং তিনজন তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করেছিলেন বলে জানিয়েছে তারা।
এই খবর প্রকাশের পর যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগ অক্সফামকে অর্থায়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করছে বলে বিবিসি জানিয়েছে। গত বছর সংস্থাটিকে প্রায় তিন কোটি ২০ লাখ পাউন্ড দেয় যুক্তরাজ্য সরকারের এই বিভাগ।
সূত্রের বরাত দিয়ে টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্সফাম কর্মীরা হাইতির রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্সের নিকটবর্তী ডেলমাসে তাদের গেস্ট হাউসে সেক্স পার্টির জন্য কম বয়সী যৌনকর্মীদের দাওয়াত দেয়, যেখানে কয়েকজন যৌনকর্মী অক্সফামের টি-শার্ট পরে ছিলেন।
২০১০ সালের ওই ভূমিকম্পে হাইতিতে দুই লাখ ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়, গৃহহীন হয়ে পড়েন কয়েক লাখ মানুষ।