এবার বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত দারুণ ছুটছে ইংল্যান্ডের জয়যাত্রা। বেলজিয়ামের বিপক্ষে হালকা চাপের গ্রুপপর্বের ম্যাচটি বাদ দিলে এখন পর্যন্ত তাদের হোচট খেতে হয়নি। ফলে তারা ৫২ বছর পর আবার শিরোপার স্বপ্ন দেখছে।
আপাতত ইংল্যান্ডের স্বপ্নের পথে বড় বাঁধা সুইডেন। এই দলটির বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল পার করাই এখন ইংল্যান্ডের জন্য চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার আগে সুইডেনকে বেশ গুরুত্বের সাথেই দেখছেন ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। তিনি বলছিলেন, সুইডেনকে হালকাভাবে নিয়ে অনেকেই আগে বিপদে পড়েছে, ‘সুইডেন এমন একটি দল যাদের আমি বেশ শ্রদ্ধা করি। তাদের বিপক্ষে আমাদের রেকর্ডটাও সুখকর নয়। আমি মনে করি, সবসময়ই আমরা তাদের খাটো করে দেখেছি। দারুণ পরিকল্পনা নিয়ে তার খেলতে নামে। এ কারণেই তাদের বিরুদ্ধে খেলাটা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। কোনো কোনো জায়গায় তারা এতটাই দুরন্ত যে ম্যাচটিতে আমাদের সামনে কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে।’
১৯৯০ সালের ইতালি বিশ্বকাপের পরে এই প্রথম সেমিফাইনালে ওঠার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে ইংল্যান্ড। কাগজে কলমে অন্তত কালকের ম্যাচটিতে ইংল্যান্ডকে ফেবারিট হিসেবে মানা হলেও নরডিক কোনো দেশের বিপক্ষে ১৩টি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে থ্রি লায়ন্সরা মাত্র তিনটিতে জয়ী হয়েছে। যে কারণে সাউথগেট বেশ সতর্কতার সাথে ম্যাচটিকে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইংলিশ ডিফেন্ডার জন স্টোনসও বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার অপেক্ষায় মুখিয়ে আছেন। কিন্তু একইসাথে ভালভাবেই উপলব্ধি করতে পারছেন এজন্য তাদেরকে সুইডেনের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে আগের দুই বিশ্বকাপে হতাশাজনক পারফরমেন্সের পরে ইংল্যান্ডের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছানো ফুটবল পাগল জাতিটিকে আরো বেশি আশাবাদী করে তুলেছে। কলম্বিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের রক্ষণভাগের প্রাণ স্টোনস ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমি শুরু থেকেই বলেছি বিশ্বকাপ জয় আমাদের স্বপ্ন। আমরা সবাই এজন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি। এখানে আমরা এসেছি এই লক্ষ্য নিয়ে এবং এজন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিশ্বকাপ জয় করতে পারলে সবাই সাফল্যের ভাগিদার হবে। দীর্ঘদিন আমরা বিশ্বকাপে কোনো সাফল্য পাইনি। দেশের সকল মানুষের জন্য আমরা এই বিশ্বকাপ উপহার দিতে চাই। পুরো ইংল্যান্ড দলকে গর্বিত করতে চাই। অনেকটাই কাছাকাছি আমরা চলে এসেছি। কিন্তু এখনো জানি অনেক কঠিন পথ আমাদের সামনে অপেক্ষা করছে। এখন আমাদের শুধু সুইডেনের বিপক্ষে ম্যাচটিতে গুরুত্ব দিতে হবে। বিশ্বকাপে কোনো ম্যাচই সহজ নয়। কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচটিকে কেউ যদি সহজ বলে তবে সে বোকা। সুইডেন দলটি বেশ সংঘবদ্ধ। প্রতিটি দলকে আমরা শ্রদ্ধা দেখিয়েছি। সুইডেনের ক্ষেত্রেও আমরা সেটা করবো। সেই সাথে আমরা দলটিকে নিয়ে পর্যালোচনা করছি।’
সুইডেনের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আত্মবিশ্বাসীই ছিলেন অধিনায়ক হ্যারি কেইন। তবে, দলটাকে হালকাভাবে নিতে নারাজ তিনি। বললেন, ‘ওদের দলে অনেক ভাল ফুটবলার আছেন। তারা চাইলেই ম্যাচের রং বদলে ফেলতে পারেন। ওদের বিপক্ষে আত্মবিশ্বাস নিয়েই আমরা মাঠে নামবো। কিন্তু, খুব বেশি নির্ভার থাকার সুযোগও নেই।’ হ্যারি কেইন চলতি আসরে ছয়টি গোল করে গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে আছেন সবার আগে।