ম্যালেরিয়া রোগ পুরোপুরি নির্মূল করতে বান্দরবানে গবেষণামূলক টিকা কর্মসূচি শুরু হতে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জেলার লামা ও আলীকদম উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ ১০০টি পাড়ার ১০ হাজার বাসিন্দাকে টিকা ও ঔষধ প্রয়োগ করা হবে।
১৮ মার্চ সোমবার বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশে এই গবেষণা কার্যক্রমের প্রধান গবেষক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. আবুল ফয়েজ।
অধ্যাপক ফয়েজ আরো জানান, ‘ম্যালেরিয়া নির্মূলে গবেষণা (এমভিডিএ): সবার জন্য টিকা এবং সবার জন্য ঔষধ, বাংলাদেশ’-এর আওতায় বাংলাদেশে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় বান্দরবানের লামা ও আলীকদম উপজেলাকে এই গবেষণার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। ‘দ্য আর টুয়েন্টিওয়ান ম্যাট্রিক্স এম’- নামক এই টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক অনুমোদিত। ম্যালেরিয়ার জন্য উদ্ভাবিত এই দ্বিতীয় টিকাটি উৎপাদন করছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। গবেষণায় এই টিকার সাথে ঔষধ হিসাবে ডিএইচএ পাইপ্যারাকুইন ব্যবহার করা হবে।
গবেষণায় নির্বাচিত গ্রামগুলোর ৬ মাসের বেশি বয়সী সব অধিবাসীকে তাদের সম্মতির ভিত্তিতে টিকা ও ঔষধ প্রয়োগ করে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তবে গর্ভবতী মা, আগামী এক বছরের মধ্যে গর্ভধারনের পরিকল্পনা রয়েছে এমন নারী, বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন মা, ম্যালেরিয়ার অন্য টিকা গ্রহণ করেছেন কিংবা ম্যালেরিয়ার অন্য গবেষণায় অন্তর্ভূক্ত হিসেবে টিকা পাচ্ছেন এমন কেউ, চিকিৎসা পাচ্ছেন এমন মারাত্মক অসুস্থ কেউ, গবেষণায় ঔষধ বা টিকার পূ্র্ববর্তী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ইতিহাস আছে এমন কাউকে গবেষণার অন্তর্ভূক্ত করা হবে না।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত এই টিকা ইতোমধ্যে ৭৭% কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে বলে জানানো হয় ব্রিফিংয়ে।
সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. মো. আব্দুস সাত্তার, বিআইটিআইডি চট্টগ্রাম এর সহকারি অধ্যাপক ডা. রুমানা রশীদ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক বিভাগীয় পরিচালক ডা. পু চ নু, চমেক মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ, শিশু বিভাগের অধ্যাপক ডা. রাশেদা সামাদ, জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সহকারি পরিচালক ডা. অং চা লু, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. এম এম নয়ন সালাউদ্দিন এবং সংশ্লিষ্টরা।
জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচি, সিডিসি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ডেভ কেয়ার ফাউন্ডেশন, চমেক, ব্র্যাক, সিআইপিআরবি, মাহিদল অক্সফোর্ড রিসার্চ ইউনিট ও জেনার ইনস্টিটিউট, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এই গবেষণায় সম্পৃক্ত রয়েছে বলে জানানো হয়।