Khola Chokh | Bangla News, Entertainment & Education

বান্দরবানে পরিবেশ আইন না মেনেই পাহাড় কেটে জলাশয় ভরাট

বান্দরবানে অবৈধভাবে পাহাড় কেটে রাতের আঁধারে ভরাট করা হচ্ছে জলাশয়। পরিবেশ আইন লংঘন করে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় স্থানীয় প্রভাবশালী মনির চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে পুরনো জলাশয় বা পুকুরটি ভরাট করে দোকানঘর এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের এ কর্মযজ্ঞ চলছে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, বান্দরবান পৌরসভার তিন নাম্বার ওয়ার্ডস্থ সেনা রিজিয়নের পাশ^বর্তী সেগুনবাগিচা এলাকায় জলাশয় বা পুকুরটি পাহাড় কাটা মাটি দিয়ে ভরাট করে ফেলা হচ্ছে। পুকুরটির পশ্চিম, উত্তর এবং পূর্ব দিকে তিনপাশে একাধিক স্থানে টিন ও পলিথিনের ঘেরা দিয়ে ঢেকে মাটি ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। কৌশলে বাঁশ-কাঠের খুঁটি দিয়ে প্রাথমিকভাবে কয়েকটি কাঁচা দোকানঘরও তৈরি করা হয়েছে।

স্থানীয়দের তথ্যমতে, ভরাটের কাজ করা জলাশয় বা পুকুরের জায়গাটি মূলতঃ সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং সেনাবাহিনীর অধিগ্রহণ করা জমি। এছাড়াও সরকারি কিছু খাস জমিও রয়েছে সেখানে। কিন্তু প্রভাবশালী মনির চৌধুরী পরিবারের পাহাড়ি জমি রয়েছে সেগুনবাগিচা এলাকায়। জমিজমা সম্পত্তি নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিরোধও চলমান রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসাইন, রমিজ উদ্দিনসহ অনেকে বলেন, জলাশয় বা পুকুরটি একটা সময় বালাঘাটা এবং রোয়াংছড়ি স্টেশনগামী মানুষদের গোসলের অন্যতম পানির উৎসস্থল ছিলো। কিন্তু আশপাশের দখলবাজদের অত্যাচারে জলাশয়টি বিলীন হতে চলেছে। চারপাশ দখল হতে হতে ছোট হয়ে পড়েছে। কচুরিপানা এবং ময়লা আবর্জনায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, মূলতঃ মনির চৌধুরীকে ব্যবহার করে স্বার্থান্বেষী মহল জলাশয় বা পুকুরটি ভরাটের মাধ্যমে সরকারি জায়গাটি দখলের পাঁয়তারা করছে। মনির চৌধুরী নিজেই সরকারি খাস জমি এবং বিরোধীয় জমি বিক্রি করে ফায়দা লুটতে পরিবেশ আইন লংঘন করে জলাশয় ভরাটের কাজটি বাস্তবায়ন করছেন। বালাঘাটা এমডিএস এলাকায় বসতি নির্মাণের জন্য রাতের বেলায় এক্সকেভেটর দিয়ে পাহাড় কাটা মাটিগুলো ট্রাকযোগে এনে জলাশয়টি ভরাট করা হচ্ছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মনির চৌধুরী বলেন, আমি কোনো ধরনের পাহাড় কাটছিনা। জলাশয় বা পুকুর ভরাটের কাজও করছিনা। জলাশয় বা পুকুরের জায়গাটি আমাদের, দোকানঘর ভেঙ্গে যাওয়ায় শুধুমাত্র মাটি ফেলে দোকানটি ঠিক করা হচ্ছে।

এদিকে সরকারি জায়গা দখল করে জলাশয় বা পুকুর ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আব্দুচ সালাম বলেন, জলাশয় বা পুকুর ভরাট করা পরিবেশ আইন বিরোধী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সেগুনবাগিচা এলাকায় পাহাড় কাটা মাটি ফেলে জলাশয় পুকুর ভরাটের খবর পেয়েছি। রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন
Exit mobile version