বায়ু দূষণের কারণে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর গর্ভবতী নারীদের মৃত সন্তান প্রসব এবং গর্ভপাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্প্রতি বিখ্যাত স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণা সাময়িকী ‘দ্য ল্যানসেট প্ল্যানেটরি হেলথ জার্নাল’র একটি গবেষণা থেকে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, বায়ুদূষণের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে গর্ভপাতের সংখ্যা বাড়ছে। নির্দিষ্ট সময়ের আগে সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন অনেক মা। সেসব শিশুর ওজনও স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মান অনুযায়ী, প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ১০ মাইক্রোগ্রাম পিএম ২.৫ থাকলে তাকে সহনীয় বলা যেতে পারে। সেখানে দেশে প্রতি ঘনমিটারে পিএম ২.৫ আছে ৬১ মাইক্রোগ্রাম। ফলে ফুসফুসে ক্যানসার ও কিডনি বিকলের মতো রোগও ব্যাপকভাবে ছড়াচ্ছে।
চীনের পিকিং ইউনিভার্সিটির তাও জিউ’র নেতৃত্বে এই গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। তিনি বলছেন, ‘গর্ভাবস্থার ক্ষতিতে পৃথিবীতে দক্ষিণ এশিয়াই সবচেয়ে বেশি মাশুল গুণছে। পৃথিবীতে এই অঞ্চলের বাতাসে সবচেয়ে বেশি পিএম ২.৫ পাওয়া যায়।’
পরিসংখ্যান বলছে, ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশের বাতাসে পিএম ২.৫-এর পরিমাণ মারাত্মক ভাবে বেশি। এটি এমন এক ধরনের দূষিত কণা, যা নিশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসের একেবারে গভীরে চলে যেতে পারে এবং সেখান থেকে খুব সহজেই রক্তে মিশে যায়।
ফলে বাড়ে হৃদরোগ এবং ফুসফুসের রোগের আশঙ্কা। শুধু তাই নয়, এই গবেষণা দেখাচ্ছে, এই ধরনের দূষিত কণা হবু মায়েদের জীবনে ডেকে আনতে পারে মারাত্মক বিপদ। পিএম ২.৫ ছেদ করে ফেলতে পারে তাদের প্লাসেন্টা। আর তাতেই ঘটে যেতে পারে গর্ভপাতের মতো ঘটনা।
দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশগুলোতে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণে গর্ভপাতের ঘটনা ঘটে। সংখ্যাটা এখন গড়ে প্রায় সাড়ে তিন লাখ ছুঁয়েছে। যার পেছনে বড় কারণই হচ্ছে বায়ু দূষণ। এমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে এই পরিসংখ্যান। দূষণের পরিমাণ যে হারে বাড়ছে, তাতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন গবেষকরা।