রাজধানীর আদাবরে চার মাস বয়সী শিশু সাদিয়াকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলাকেটে হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ পারভিন (২৪) নামে এক নারীকে গ্রেফতার করেছে। পারভিন হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে।
বুধবার ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
ডিসি হারুন বলেন, পুলিশ পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ, প্রযুক্তি সহায়তা ও গোপন সূত্রের ভিত্তিতে ৫ জুলাই ভিকটিমের প্রতিবেশী পারভিনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে। পূর্ব শক্রতার জেরে পারভিন ব্লেড দিয়ে শিশু সাদিয়াকে গলা কেটে হত্যা করে। পারভিনের দেখানো মতে তার ঘর থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ব্লেডটি উদ্ধার করে পুলিশ। ইতিমধ্যে পারভীন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
হত্যার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত পারভিন একজন গৃহিনী। তিনি পাঁচ মাস আগে ঢাকায় আসেন। তার স্বামী একজন রিকশাচালক। হত্যার শিকার শিশু সাদিয়ার পিতা একজন দিনমজুর ও দাদা বস্তির ম্যানেজার। লকডাউন চলাকালে পারভিনের স্বামীকে বাসার সামনে সাদিয়ার দাদা দোকান করতে দেয়নি। এছাড়া পারভিনের সন্তানদের সঙ্গে সাদিয়ার মা খারাপ ব্যবহার ও গালিগালাজসহ করতো। এসব বিষয় নিয়ে বাদানুবাদ হতে শত্রুতা তৈরি হয়।
এই শত্রুতার জের ধরে সাদিয়ার মাকে একটি ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার পরিকল্পনা করে পারভিন। ঘটনার দিন সাদিয়ার মা সাদিয়াকে ঘুম পাড়িয়ে রান্না করতে গেলে পারভিন ঘরে ঢুকে ব্লেড দিয়ে সাদিয়াকে গলা কেটে হত্যা করে। সে একাই এই নির্মম হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করেছে।
ডিসি আরও বলেন, ‘গত ৩ জুলাই আনুমানিক দুপুর ১২টার দিকে উত্তর আদাবরে ৩৮/১০ পানির পাম্প এলাকায় চার মাস বয়সী শিশু সাদিয়াকে গলাকেটে হত্যার সংবাদ পায় পুলিশ। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ও শিশু সাদিয়ার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে সাদিয়ার বাবা বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে ঘটনা তদন্ত শুরু করা হয়।