বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণ হয় রাজধানীতে সচিবালয়ের আশপাশ এলাকায়। এর ফলে সচিবালয় এলাকায় দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিক পুলিশের শ্রবণশক্তি হ্রাস পাচ্ছে। সেখানে দায়িত্ব পালন করার সময় ৯.৬ ভাগ পুলিশ সদস্যের শ্রবণশক্তি কমেছে।
স্টামফোর্ড বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ক্যাপস ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সচিবালয় এলাকায় ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে ৭.৮ শতাংশ শব্দদূষণ বেড়েছে। এ এলাকায় উচ্চশব্দের মূল উৎস যানবাহনের হর্ন, ইঞ্জিন ও ব্রেক করার শব্দ। গবেষণার সময়ে পল্টন মোড়ে সবচেয়ে বেশিমাত্রার শব্দ পাওয়া গেছে, যা ১২৯ ডেসিবেল। এছাড়া সচিবালয় উত্তর-পশ্চিমে ও সচিবালয় মধ্য-পূর্বে ১২৮ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ পাওয়া গেছে। ১২৭ মাত্রার শব্দ মিলেছে কদমফোয়ারায়, জিরো পয়েন্টে, সচিবালয় উত্তরে ও শিক্ষা ভবন এলাকায়।
সচিবালয় দক্ষিণ-পূর্বে, সচিবালয় ১ ও ৩ নম্বর গেটে ১২৬ ডেসিবেল। আর প্রেসক্লাব এলাকায় ১২৪ ডেসিবেল ও সচিবালয় পশ্চিম (মসজিদ) এলাকায় ১২০ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ পাওয়া গেছে।
গবেষণায় আরও উঠে এসেছে যে, প্রতি ১০ মিনিটে সচিবালয়সংলগ্ন জিরো পয়েন্ট এলাকায় ৩৩২টি হর্ন হয়। এর মধ্যে হাইড্রোলিক হর্ন ছিল ৭০টি। সচিবালয় দক্ষিণ-পূর্বে একই সময়ে হর্ন বাজে ২৯২টি। এর মধ্যে ৫৪টি হাইড্রোলিক হর্ন। সচিবালয় উত্তর-পশ্চিমে এ সংখ্যা ২১৬, এর মধ্যে ২৬টি হাইড্রোলিক। আর পল্টন বাসস্ট্যান্ডে প্রতি ১০ মিনিটে ২৬৪টি হর্ন হয়, যার মধ্যে ৪২টি হাইড্রোলিক।
গবেষণায় বলা হয়েছে, সচিবালয়ের আশপাশে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের ওপর উচ্চ শব্দের প্রভাব পড়ছে। অন্তত সাড়ে ৯ শতাংশ পুলিশ সদস্য জানিয়েছেন, তাদের শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৮ দশমিক ৬ শতাংশ ট্রাফিক পুলিশ সদস্য জানান, অন্যরা জোরে কথা না বললে তারা শুনতে পান না। মোবাইলে কথা বলতে অসুবিধা হয় ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ পুলিশ সদস্যের। আর ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ জানান, তাদের টিভি দেখার সময় ভলিউম বাড়াতে হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর সচিবালয়ের চারপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। শুরুতে হর্ন বাজানোর কারণে জরিমানা করার জন্য পরিবেশ অধিদফতর মোবাইল কোর্টও পরিচালনা করে।