গত মাসে সারা দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩৫৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩৬৮ জন নিহত ও ৫১৮ জন আহত হয়েছেন। এ সময়ে রেলপথে ২০টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত ও চার জন আহত এবং নৌপথে ১৭টি দুর্ঘটনায় ৪৫ জন নিহত, ৬০ জন আহত ও ১০ জন নিখোঁজ হয়েছেন। বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
গতকাল রবিবার সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনা মহামারির মধ্যে সীমিত আকারে যানবাহন চলাচল করলেও জুন মাসে সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে চালক ১৬২ ও পরিবহন শ্রমিক ১২৫ জন। এছাড়া ১১৩ পথচারী, ৬২ নারী, ২১ বিজিবি সদস্য, ১৮ আনসার সদস্য, ১৩ পুলিশ সদস্য, পাঁচজন সেনা সদস্য, ২৮ শিশু, ২৩ শিক্ষার্থী, ১১ রাজনৈতিক কর্মী, সাতজন শিক্ষক, একজন চিকিত্সক, একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং একজন প্রকৌশলী। এর মধ্যে নিহত হয়েছেন ১১৬ জন চালক, ৯৮ জন পথচারী, ৪৯ জন নারী, ৪৬ জন পরিবহনশ্রমিক, ২১ জন শিশু, ১৯ জন শিক্ষার্থী, আটজন রাজনৈতিক কর্মী, সাতজন শিক্ষক, একজন চিকিত্সক, একজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন প্রকৌশলী, পাঁচজন পুলিশ ও দুইজন বিজিবি সদস্য।
দুর্ঘটনার কবলে পড়া যানবাহনের মধ্যে ৩৪ দশমিক ৯ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ২৪ দশমিক ১৫ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১২ দশমিক ১ শতাংশ বাস, ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ নছিমন-করিমন, ৮ দশমিক ১১ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক এবং ৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস রয়েছে।
জুন মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে ৮ জুন। ঐ দিন ২২টি দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হয়েছেন।
যাত্রীকল্যাণ সমিতি জানায়, মোট দুর্ঘটনার ৫১ দশমিক ১২ শতাংশ গাড়ি চাপায়, ২৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষে, ১৫ দশমিক ০৮ শতাংশ খাদে পড়ে, ৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ বিবিধ কারণে, ১ দশমিক ১২ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষে এবং ০ দশমিক ৫৬ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘটেছে। মে মাসের তুলনায় জুন মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ৫৬ দশমিক ১৪ শতাংশ, মৃত্যু ৫৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ ও আহতের হার ৪৩ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়েছে।
প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে সড়ক নিরাপত্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম-দুর্নীতি ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি, জবাবদিহিতার অভাব, সরকারের আন্তরিকতার অভাব ও বিগত নির্বাচনে রাজনৈতিক অঙ্গীকারের প্রতিফলন না ঘটাকে দায়ী করা হয়েছে।
সংস্থাটি মনে করে, উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পদ্ধতি ঢেলে সাজানো না হলে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি হ্রাস করে সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না।