বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে আজ শনিবার এই প্রথমবারের মতো বড় বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা আজ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও যুগ্ম মহাসচিবদের সঙ্গে এই বৈঠকে বসবেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পদাধিকারবলেই স্থায়ী কমিটির সদস্য।
বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবীর খান প্রথম আলোকে বলেন, আজ সন্ধ্যা সাতটায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ বৈঠক হবে। তিনি বলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মহাসচিব দলের ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা ও যুগ্ম মহাসচিবদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে এ ধরনের বৈঠক এটাই প্রথম।
দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া। বরাবরই এ ধরনের বৈঠকে তিনিই সভাপতিত্ব করতেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য এবং একজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রথম আলোকে বলেন, খালেদা জিয়ার কারাগারে যাওয়ার পর বিরাজমান অবস্থা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে। এর পাশাপাশি আজকের বৈঠকের মূল আলোচ্য হবে ভবিষ্যতে দলের করণীয় নির্ধারণ। দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের দেওয়া বক্তব্যে যেন অভিন্নতা থাকে, সে বিষয়ে আজ জোর দেওয়া হবে। বক্তব্য দিয়ে দলের ঐক্যে যেন কোনো ধরনের বিভেদ সৃষ্টি না হয়, সেটিও আলোচনায় গুরুত্ব পাবে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে দলটি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করছেন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপির সূত্রগুলো জানিয়েছে, আজকের বৈঠক ডাকার পেছনে তারেক রহমানের নির্দেশনা রয়েছে।
আজ সকালে আলাপকালে স্থায়ী কমিটির একজন প্রবীণ সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, দল কীভাবে পরিচালিত হবে, তা নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন আগেই নির্দেশনা দিয়েছেন। ফলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তারেকই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন হবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিএনপির চেয়ারপারসনের সাজার রায়ের পরপর যেভাবে তারেক রহমানের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন হওয়ার কথাটা এসেছে, তা নিয়ে দলের মধ্যে কোনো কোনো নেতা বিরক্ত হয়েছেন। দলের অনেকই বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছেন। এ নিয়ে আর যেন কোনো প্রশ্ন দলের নেতাদের মধ্যে না থাকে, সবাই যেন নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন, সে বিষয়টি বৈঠকে গুরুত্ব পাবে। মূলত দলের ঐক্যের বিষয়টি সবার সামনে তুলে ধরতে এ বৈঠক ভূমিকা রাখবে।
ওই নেতা বলেন, গণমাধ্যমের সামনে ও দল পরিচালনায় মূলত স্থায়ী কমিটির সদস্য, মহাসচিব, ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা ও যুগ্ম মহাসচিবদের কথা গুরুত্ব পায়। এঁদের কারও বক্তব্য বা কর্মকাণ্ড নিয়ে যেন বিভ্রান্তি না ছড়ায়, সে কারণে সবাই মিলে বৈঠকে বসা হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, তারেক রহমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন। তাঁর নির্দেশনায় দল চলবে। এরপর ওই দিন রাতেই দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের একই কথা বলেন। রাতেই গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠান। সেখানে বলা হয়, বিবৃতিটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের।
বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, তারেকের দায়িত্ব পালনের বিষয়টি স্থায়ী কমিটির সদস্যরা মিলে জানালে ভালো হতো। এটা না হওয়ায় কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।