লক্ষ্মীছড়িতে পাহাড় কেটে কলেজের ভবন নির্মাণ!

প্রায় ৫০ ফুট উঁচু পাহাড়ের এক পাশ পাদদেশ থেকে চূঁড়া পর্যন্ত কেটে ফেলা হয়েছে। কাটা পাহাড়ের গা ঘেঁষে তৈরি হচ্ছে ভবন। পাহাড়ের মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে ভবনের জায়গা। পরিবেশ আইন অমান্য করে খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়িতে এভাবে প্রকাশ্যে পাহাড় কাটা হলেও বাধা দেওয়ার কেউ নেই।

খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি সদর উপজেলার বাজারের পাশে মানিকছড়ি-লক্ষ্মীছড়ি সড়কে ওই পাহাড়ের অবস্থান। পাহাড়ের পাশেই লক্ষ্মীছড়ি কলেজ নামে একটি বেসরকারি কলেজের একতলা ভবন। ওই কলেজের জন্য নতুন আরেকটি ভবন তৈরির প্রয়োজনেই পাহাড়টির কিছু অংশ কাটা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

গত শনিবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, একদল শ্রমিক পাহাড় কেটে মাটি স্তূপ করে রাখছেন। পাহাড় কেটে সমান করা জমিতে ভবন নির্মাণের কাজ করছিলেন আরেক দল শ্রমিক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা বলেন, লক্ষ্মীছড়ি কলেজের ভবন নির্মাণের জন্য ওই পাহাড় কাটা হচ্ছে। পাশাপাশি পাহাড়ের মাটি বিক্রিও করা হচ্ছে।

খাড়াভাবে কাটার কারণে পাহাড়চূড়ায় অবস্থিত একটি মুঠোফোনের টাওয়ার ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। পাশের ধানখেতেও কাটা পাহাড়ের বালু জমেছে। আশপাশের লোকজনের কেউই নিজের নাম প্রকাশ করে এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি। কথা বলতে চাননি লক্ষ্মীছড়ি কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তারাও। তবে নাম প্রকাশ না করে কয়েকজন শ্রমিক ও এলাকাবাসী বলেছেন, প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত পাহাড়টি কাটা হয়। প্রায় দুই-তিন মাস ধরে এভাবে পাহাড় কেটে কলেজের ভবন নির্মাণের জন্য জায়গা সমান করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি তাতুমনি চাকমার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অসুস্থ বলে জানানো হয়। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ যোথুইপ্রু চৌধুরী মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ছিলেন। কলেজের অন্য শিক্ষকদের কেউই কথা বলতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষীছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ ইকবাল বলেন, লক্ষ্মীছড়ি কলেজের জন্য একটি ভবন নির্মাণ হচ্ছে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অনুদানে। জেলা পরিষদ থেকে ভবন নির্মাণের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। এ জন্য মাটি সমান করা হয়েছে। কিন্তু কোনো পাহাড় কাটা হয়নি। মূল পাহাড়ে কেউ হাত দেয়নি।

শেয়ার করুন