Khola Chokh | Bangla News, Entertainment & Education

রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন

একটা কথা ব্যাপক প্রচলিত- রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। আমাদের চলচ্চিত্রের মানুষজন বোধকরি একটু বেশিই রেগে গিয়েছিলেন। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে সৃষ্টি অপ্রীতিকর ঘটনাসহ বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে আমাদের চলচ্চিত্রাঙ্গন বলা যায় নানা ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। সবার মাঝে দেখে নিব… মনোভাব।

বিশেষ করে জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খানকে বয়কট করার পর বিভিন্ন পক্ষের ‘দেখে নিব ভাব’ অশোভন মাত্রায় প্রকাশ হতে থাকে। অন্যদিকে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি কর্তৃক অব্যাহত ভাবে একাধিক পরিচালকের বিরুদ্ধে কারণ দর্শাও নোটিস জারির প্রেক্ষিতে যৌক্তিক এবং অযৌক্তিক ভাবেও নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। যার ফলে কাজের কাজ আসলে কিছুই হচ্ছিল না। নতুন ছবি নির্মাণ তো প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল।

আশার কথা- চলচ্চিত্রাঙ্গনের অস্থিরতা কিছুটা হলেও কমেছে। শাকিব খানকে ঘিরে সৃষ্টি জটিলতা দূর হয়েছে। পত্র-পত্রিকাসহ বিভিন্ন মাধ্যমের খবর শাকিব খান নিজে গিয়েছিলেন নায়ক ফারুকের বাসায়। তার কৃতকর্মের জন্য নায়ক ফারুকের কাছে মাফ চেয়েছেন। এ সময় চলচ্চিত্রাঙ্গনের বিশিষ্টজনেরাও উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে একজন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র প্রযোজককে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করার ঘটনারও একটি সন্তোষজনক ফয়সালা হয়েছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে আমাদের চলচ্চিত্রাঙ্গনে এখন শুধু সাফল্যের বাতাসই বইবে।

রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন- এই কথাটিই আবার সকলকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। এতদিন আমাদের চলচ্চিত্রাঙ্গনে এই যে এক ধরনের অস্থিরতা ছিল সেটা হয়েছে অহেতুক রাগারাগির কারণে। শাকিব খান নায়ক ফারুককে উদ্দেশ্য করে কিছু একটা বলেছেন। যা ছিল অশোভন কিন্তু তাই নিয়ে ফারুকসহ বড়রা ক্ষেপে গেলেন। ফলে হলো কী, উভয় পক্ষকে নানা ভাবে ক্ষেপিয়ে তোলার মানুষের অভাব হলো না। ফলে নবীন-প্রবীণের দ্ব›দ্বটাই প্রকট হয়ে উঠলো।

সেই শাকিব তো ঠিকই ফারুকের বাসায় গেলেন। মাফও চাইলেন। এই কাজটা যদি আগে করতেন তিনি তাহলে তো ঘটনার ডাল পালা আর জন্ম নেয় না। তবুও আমরা শাকিব খানকে শুভেচ্ছা জানাই। দেরিতে হলেও নায়ক ফারুকের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। প্রবীণের কাছে নবীনের ক্ষমা চাওয়াতে কোনো লজ্জাবোধ থাকা উচিত নয়। কারণ প্রবীণ পথ তৈরি করে দিয়েছেন বলেই নবীনরা সে পথে হাঁটতে পারছে।

চলচ্চিত্র পরিবারের কাছে আমাদের একটি আবেদন আছে। যারা বলেন, এদেশের মানুষ চলচ্চিত্র দেখে না তারা ভুল বলেন। অজ্ঞাতনামা, আয়নাবাজিসহ সাম্প্রতিক সময়ের কয়েকটি চলচ্চিত্র প্রমাণ করেছে আমাদের দেশের মানুষ এখনও বিনোদন মানেই চলচ্চিত্রের কথা ভাবে। তবে দর্শক চলচ্চিত্রে নতুন কিছু দেখতে চায়। কাহিনী, অভিনয়, নির্মাণ শৈলী থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সব ক্ষেত্রেই দর্শক আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির ফোকাস দেখতে চায়।

এক্ষেত্রে আমরা চলচ্চিত্রের মানুষ জন কতটা প্রস্তুত? এখনও আমরা আমাদের চলচ্চিত্রের কারিগরি বিভিন্ন বিষয় সমাধান করার জন্য পাশের দেশে যাই। অন্যের সাহায্য নিয়ে মহৎ কিছু সৃষ্টি করা যায় না। মহৎ কিছু সৃষ্টি হলেও সেটা আমার বলে দাবি করা যায় না। বিষয়টির প্রতি সকলে গুরুত্ব দিবেন আশাকরি।

শেয়ার করুন
Exit mobile version