এন এ জাকির, বান্দরবান॥ বান্দরবানের পাহাড়ে পাহাড়ে জুমের নতুন ফসল ঘরে তুলতে শুরু করেছে জুমিয়া সম্প্রদায়। ফসল তোলা ও নবান্ন উৎসব নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে জুমিয়ারা। আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় গত বছরের চেয়েও এবার জুমে ফলন ভালো হয়েছে। পাহাড়ি পল্লীগুলোতে চলছে জুম উৎসব।
বান্দরবান সদরসহ ছয় উপজেলায় এবার ৮ হাজার ৯শ’ ৬৭ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে জুম চাষ হয়েছে। প্রতি বছর মার্চ-এপ্রিল মাসে পাহাড়ে গাছপালা কেটে রোদে শুকানোর পর আগুনে পুড়িয়ে জমি প্রস্তুত করা হয়। ঐ জমিতে ধান, ভুট্টা, মারফা, মরিচসহ নানা ফসলের বীজ একসাথে রোপন করে থাকেন জুমিয়ারা। অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে শুরু হয় ঘরে ফসল তোলার কাজ।
জুমের ফসল ঘরে তোলা উপলক্ষে জুমিয়ারা মেতে উঠছে নিজস্ব আচার-অনুষ্ঠানে। বান্দরবান সদরে লাইমি পাড়া, ফারুক পাড়া, গেৎসেমানি পাড়া, লাইরুনপি পাড়াসহ বিভিন্ন পল্লীতে জুম উৎসব পালন করেছে বম সম্প্রদায়। ফারুক পাড়ার জুমচাষী লাল সম লিয়ান বম জানান, নতুন ফসল ঘরে তোলার সময় আমরা গির্জায় যাই। সেখানে গিয়ে সবার মধ্যে নতুন ফসল বন্টন করে অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমরা নতুন ফসল ঘরে তুলি। আরেক জুম চাষী রাম লিং লিয়াম বম জানান, আবহাওয়া ভাল থাকায় এবার আমাদের জুমের ফসল ভাল হয়েছে। পরিশ্রম সার্থক হয়েছে তাই অনেক ভাল লাগছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আলতাফ হোসেন জানান, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের অন্যতম আয়ের উৎস জুম চাষ। পাহাড়িদের ৮০ ভাগ খাদ্য চাহিদা পূরণ হয় এই জুম চাষের মাধ্যমে। তাই কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে জুম চাষে পাহাড়িদের সব ধরনের সহযোগিতা দেবার চেষ্টা করা হয়।
বান্দরবানের মারমা, বম, ম্রো, ত্রিপুরাসহ ১১টি জুমিয়া সম্প্রদায়ের আয়ের প্রধান উৎস জুমচাষ। তারা এক মৌসুমের জুমের উৎপাদিত ফসল দিয়ে সারাবছরের পরিবারের খাদ্য যোগান দেন। ঐ সম্প্রদায়গুলো যুগ যুগ ধরে এভাবে জীবনযাপন করে আসছে।