রাজধানীর শাহবাগ থানায় করা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা রাশেদ খানকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম রায়হান উল ইসলাম রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
এর আগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই মো. সজীবুজ্জামান আসামিকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। এ সময় আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ‘গত ২৭ জুন আসামি রাশেদ তার নিজের ফেসবুক মুহাম্মাদ রাশেদ খাঁন থেকে ফেসবুক গ্রুপ ‘কোটা সংস্কার চাই (সকল ধরণের চাকরির জন্য)’ সন্ধ্যা ৮টা ৮ মিনিটে লাইভে এসে একটি বক্তব্য প্রদান করেন। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য কটুক্তি করেন। উক্ত বক্তব্য ছাত্র সমাজের প্রতি উস্কানিমূলক। যার মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে। এই উস্কানিমূলক বক্তব্যের পেছনের ইন্ধনদাতাদের নাম ঠিকানা জানতে এবং ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য এ আসামিকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
শুনানির এক পর্যায়ে আসামি রাশেদ নিজেই কিছু বলতে চাইলে বিচারক অনুমতি দেন। এরপর রাশেদ বলেন, ‘এ আন্দোলন আমার একার আন্দোলন নয়। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন। এ সময় বিচারক বাধা দিয়ে বলেন, ‘আপনার গভীরে যেতে হবে না, এ মামলার অভিযোগ সম্পর্কে বলার থাকলে বলুন।’ এরপর রাশেদ বলেন, আমি আমার লাইভে প্রধানমন্ত্রীর নাম ধরে কোনো কথা বলিনি। আমি ছাত্র সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে বলেছি।’
এরপর বিচারক বলেন, পুলিশ তদন্ত করবে, আপনি তাদের সহযোগিতা করবেন, এটাই মূলত রিমান্ড। আমি সময় বেধে দিচ্ছি, আপনাকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে ৫ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।’
এর আগে, শনিবার মিরপুর ১৪ নম্বরের ভাসানটেক বাজার এলাকার মজুমদার রোডের ১৪ নম্বর বাসা থেকে রাশেদ খানকে আটক করে ডিবি পুলিশ।
সরকারি চাকরিতে কোটা ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন করছেন দেশের বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতে গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে ঘোষণা দেন কোনো কোটা থাকবে না বলে। এরপর গত ২ মে এবং সবশেষ গত ২৭ জুন সংসদে একই কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু ঘোষণা অনুযায়ী দ্রুত প্রজ্ঞাপনের দাবিতে ফের আন্দোলনের ঘোষণা দেয় তারা।